স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে
এবার চট্টগ্রাম ফটিকছড়ির সুন্দপুর ইউনিয়ন এর ব্যবসায়ী এনায়েত করিম চৌধুরী পিন্টু মুজিববর্ষ উপলক্ষে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে রবি মৌসুমে তার ১৬ শতাংশ ফসলি জমিতে লালশাক আর পালংশাক দিয়ে তৈরি করেছেন বাংলাদেশের মানচিত্র, মুজিব 100 আর আওয়ামী লীগের প্রতীক নৌকা।
চট্টগ্রাম জেলার অন্তর্গত ফটিকছড়ি উপজেলার ১০ নং সুন্দপুর ইউনিয়ন এর ৭ নং ওয়ার্ড এর এনায়েত আলী চৌধুরী বাড়ীর , সুন্দপুর ইউনিয়নের ১নং সংগঠক প্রতিষ্ঠাতাআওয়ামীলীগের সেক্রেটারী মরহুম শাহাআলম চৌধুরীর পুত্র এনায়েত করিম চৌধুরীর মাতৃভূমির প্রতি এমন ভালোবাসা, তার কৃষিকর্মের দ্বারা প্রতিফলিত হয়েছে।
ব্যবসায়ী এনায়েত করিম চৌধুরী তার মধ্যে লালিত দেশাত্মবোধকে প্রকাশ করতেই নিজের অক্লান্ত পরিশ্রম, মেধা আর মনন দিয়ে শৈল্পিক হাতে অঙ্কন করেছেন এই শিল্পকর্ম। প্রতিদিনই নতুন প্রজন্মের নানা বয়সের লোকজন আসছেন সবজি দিয়ে গড়া তৈরি মানচিত্র দেখতে।সবজি দিয়ে অঙ্কিত তার এই শিল্পকর্ম দেখতে ভিড় করছেন নানা শ্রেণিপেশার মানুষ।
এনায়েত করিম জানান,আমি ভাষা আন্দোলন দেখিনি, মুক্তিযুদ্ধ দেখিনি। ছোটবেলা থেকেই দেশের প্রতি রয়েছে আমার গভীর ভালোবাসা আর দেশপ্রেম। আমার কৃষি জমির ১৬ শতাংশ জায়গায় বাংলাদেশের মানচিত্রটি তৈরি করতে সাড়ে ৩ মাস সময় লেগেছে । প্রথমে জমিতে বীজ রোপণ করে, পরে ধীরে ধীরে চারধার কেটে তৈরি করা হয় বাংলাদেশের মানচিত্রটি।
তিনি বলেন, চট্টগ্রাম নগরীতে ব্যবসা করেছি। পাশাপাশি পৈত্রিক সম্পত্তিতে অল্প পুঁজিতে কৃষির আধুনিকায়নে চাষাবাদ করার চেষ্ঠা করছি ।
ভবিষ্যতে একটি খামার বাড়ি করবো, যেখান থেকে এলাকাবাসী স্বল্প মূল্যে সংগ্রহ করতে পারবে সার, বীজ, কীটনাশকসহ বিভিন্ন কৃষি যন্ত্রপাতি। বাড়ির অভ্যন্তরে একটি পুকুর আছে যেখানে দেশি মাছ চাষ , দেশি হাঁস-মুরগি, কবুতর ও গরু-ছাগলের খামার, এছাড়া সব ধরনের ফলজ গাছের বাগান, উন্নত ও বিভিন্ন জাতের থাই সুপার টেন পেয়ারা বাগান, মাটি বিহীন ঘাস চাষ করা সহ আরও দীর্ঘ পরিকল্পনা আছে।
এনায়েত করিম চৌধুরী পিন্টুর ব্যতিক্রম উদ্যোগ দেখতে আসা দর্শনার্থী চট্টগ্রাম নাসিরাবাদ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এর ছাত্র ওয়াসিফ উল আলম ,ফটিকছড়ি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ এর দশম শ্রেণির ছাত্র মোঃ রিয়াদ উদ্দিন,আশফাক আলমগীর রিগান, আদিয়াত আলমগীর রাফসান ও নাফিসা মুরশেদ ওয়াজিহা জানায়, এতদিন বইপুস্তকে বা ছবিতে বাংলাদেশের মানচিত্র দেখেছে, মাটির ওপর শাক দিয়ে তৈরি দেশের মানচিত্র দেখে তারা খুবই আনন্দিত।
সুন্দপুর আওয়ামীলীগ এর সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি সদস্য মোঃ জানে আলম বলেন আমাদের এই গ্রামে মুক্তিযোদ্ধা সংগঠকের ছেলে এনায়েত করিম চৌধুরী ৮ গন্ডা জায়গার উপর সবুজ ও লাল শাখ দিয়ে বাংলাদেশের মানচিত্রটি খুবিই দর্শনীয় এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীকে জীবন্ত ফুটিয়ে তোলার জন্য তাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ও মোবারক বাদ জানাই । তার এই মানচিত্র দেখার জন্য দূরদুরান্ত থেকে লোকজন আসছে এবং আমাদের সুন্দরপুর গ্রামের প্রসংশা করছে।
ফটিকছড়ি পৌরষভা ৩নং ওয়ার্ড কমিশনার ও ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক হেলাল উদ্দিন বলেন, এনায়েত করিম চৌধুরীর ব্যতিক্রম প্রচেষ্টা বাস্তবে উপভোগ করলাম। তার প্রচেষ্টাকে আমরা স্বাগত জানাই । তিনি দেশপ্রেমের এক উজ্জ্বল এবং অনন্য উদাহরণ। প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাকে সার্বিক সাহায্য ও সহযোগিতা দেওয়া হবে।
ফটিকছড়ি পৌরসভা আওয়ামীলীগ সভাপতি ও মেয়র ইসমাইল হোসেন বলেন দেশের প্রতি ভালোবাসার নিদর্শন থেকেই ১০ নং সুন্দপুর ইউনিয়ন এর ৭ নং ওয়ার্ড এর এনায়েত আলী চৌধুরী বাড়ীর, এনায়েত করিম চৌধুরী পিন্টু নিজের ১৬ শতাংশ জমিতে পালংশাক দিয়ে বাংলার মানচিত্র সবুজ জমিন আর লালশাকে উদিত সূর্য অঙ্কিত করে তৈরি করেছেন এই মানচিত্র। পালংশাকে এবং লালশাকে তৈরি করেছেন বাংলাদেশের মানচিত্র, মুজিব 100 আর আওয়ামী লীগের প্রতীক নৌকা । শাক দিয়ে অঙ্কিত এই শিল্পকর্ম নজর কেড়েছে এলাকাবাসীর। কেননা ফসলি জমিতে সবজি দিয়ে এমন চিত্র অঙ্কন শুধু এলাকায় নয় চট্টগ্রামে এই প্রথম। তাই প্রতিদিন শিক্ষার্থী, মুক্তিযোদ্ধাসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ দেখতে আসছেন এই শিল্পকর্ম। আমি তার উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করিছি।
খবর পেয়ে এডঃ জজ কোর্ট ,অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর মেট্রোপলিটন এস.জে. ও ফটিকছড়ি উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান ছালামত উল্লাহ চৌধুরী শাহীন পরিদর্শনে আসেন এনায়েত করিম চৌধুরীর বাড়িতে। তার এই শিল্পকর্ম দেখে প্রশংসা করেন পাশাপাশি সব ধরনের সাহায্যের আশ্বাসও প্রদান করেন। তিনি বলেন সবজি দিয়ে অঙ্কিত শিল্পকর্ম ঘুরে দেখেছি এটা দেশপ্রেমের এক অনন্য দৃষ্টান্ত । আমরা তার এই দেশপ্রেম চট্টগ্রামবাসীর মাঝে ছড়িয়ে দিতে চাই এবং আমাদের পক্ষ থেকে তাকে যতটুকু সাহায্য সহযোগিতার প্রয়োজন হয় আমরা করব। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীকে জীবন্ত ফুটিয়ে তুলে ফটিকছড়ি তথা চট্টগ্রামের ভাবমূর্তি উজ্জল করেছে । আমার জানামতে চট্টগ্রামে তিনিই ১ম সবজী দিয়ে বাংলাদেশের মানচিত্র করেছে। আমি তার উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করিছি।
চট্টগ্রাম ফটিকছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, নাজিম উদ্দিন মুহুরী বলেন এনায়েত করিম চৌধুরী পিন্টুর , শৈল্পিক হাতের এই শিল্পকর্মের সবুজ শাকের মানচিত্রের বুকে লাল শাক গুলো যেন উদিয়মান সূর্য। সবজি দিয়ে তার এই মানচিত্র নতুন প্রজন্মকে দেশপ্রেমে উজ্জীবিত করবে এবং স্বাধীনতা সম্পর্কে জানার আগ্রহ বাড়াবে । দেশের নতুন প্রজন্ম তার এ উদ্যোগ দেখে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীকে জীবন্ত ফুটিয়ে তোলার জন্য নতুন নতুন উদ্যোগ গ্রহন করার চেষ্টা করুক এটাই আমার প্রত্যাশা। আমার পক্ষ থেকে তাকে সার্বিক সাহায্য ও সহযোগিতা দেওয়া হবে। আমি নতুন প্রজন্মের কাছে দেশকে ভালবাসার কথা বলে যেতে চাই। আমি চাই, তারা যেন কোনো কিছুতে পিছিয়ে না পড়ে। অনেক রক্তের বিনিময়ে আমরা এ ভাষায় স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারছি। অর্জিত মাতৃভাষার মর্যাদা ও স্বাধীনতার প্রতি তাদের শ্রদ্ধা বাড়ুক এটাই আমার কাম্য।