তরুণদের কাছে ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ফটোগ্রাফি। ক্যামেরায় ক্লিক করে সময়কে ধরে রাখার এই
আধুনিক পদ্ধতি আজকের অনেক তরুণ – তরুণীকে বানিয়ে তুলছে সৌখিন ফটোগ্রাফার।
ছবি তুলতে তুলতেই সৌখিন ফটোগ্রাফারদের একটা প্লাটফর্ম দরকার। যে প্লাটফর্ম থেকে আয়োজন করা হবে নতুন
ফটোগ্রাফারদের নিয়ে প্রশিক্ষণ কর্মশালা, ছবির প্রদর্শনী এবং তরুণদের গড়ে তোলা হবে দক্ষ
ফটোগ্রাফার হিসাবে। এরকম ভাবনা থেকে স্কিল ইউনিভার্সিটির আয়োজন করেন মাস্টারিং ফটোগ্রাফি কর্মশালা।
ফটোগ্রাফার হিসেবে ক্যারিয়ার গড়ছেন বর্তমানে অনেকেই। তবে শুরুটা যদি হয় আন্তর্জাতিক মানের একজন ফটোগ্রাফারের হাত ধরে! যিনি মাতৃভাষা বাংলাতেই শেখান ছবি তোলার কলাকৌশল।শতাধিক আন্তর্জাতিক পুরস্কার প্রাপ্ত বাংলাদেশি ফটোগ্রাফার শোয়েব ফারুকীর ‘মাস্টারিং ফটোগ্রাফি’ কর্মশালায় শেখানো হয়েছে ক্যামেরার আদ্যোপান্ত।
শুক্রবার (২৫ মার্চ) বিকেল ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কে স্কিল ইউনিভার্সিটির আয়োজনে শুরু হয় কর্মশালাটি। কর্মশালায় ফটোগ্রাফারদের শেখানো হয় লেন্সের খুঁটিনাটি, ফটোগ্রাফি এক্সপোজার, ফটোগ্রাফি কম্পোজিশন, লাইটের ব্যবহার, প্রফেশনাল ছবি তোলার কৌশল এবং ফটোগ্রাফি ক্যারিয়ারের প্রয়োজনীয় দিকসমূহ।
শোয়েব ফারুকী বলেন,পারিবারিক ছবির অ্যালবাম দেখেই ছবি তোলার প্রতি আগ্রহ তৈরি হয় তার। বয়স যখন ২০ বছর, তখন থেকেই অন্যের কাছ থেকে ধার করা ক্যামেরায় ছবি তোলা শুরু। তখন মানুষের ছবি তুলতেন। এরপর প্রকৃতির ছবি তোলা শুরু হলো । তখন ঘরে ঘরে ক্যামেরা ছিল না। একজন ছাত্রের পক্ষে তখন ক্যামেরা কেনাটাও সহজ ছিল না। তাই ধার করা ক্যামেরা দিয়েই চলতে থাকল। অবশ্য এ শখ মেটাতে তাঁকে একবার চড়া মূল্যও দিতে হয়েছে। বিদেশফেরত এক আত্মীয়ের কাছ থেকে ক্যামেরা এনেছিলেন ছবি তুলতে। সেই ক্যামেরা অল্প সময়ের মধ্যে ফেরত দেবে বলে নিয়ে যায় আরেক বন্ধু। কিন্তু ক্যামেরা আর ফেরত আসেনি। শেষ পর্যন্ত মায়ের সোনার চুড়ি বিক্রি করে সাড়ে চার হাজার টাকায় একই মডেলের একটি ক্যামেরা কিনে দিয়েছিলেন তিনি।
তিনি বলেন বাংলাদেশে থেমে থাকেনি ফটোগ্রাফিক চর্চা । কর্মবীর ও সৃষ্টিশীল মানুষেরা কারো মুখাপেক্ষী হয়ে বসে থাকেন না। আমাদের আলোকচিত্রপ্রেমীরা তার প্রমাণ দিয়েছেন, ছবি তোলার মধ্যে একটি শৈল্পিকতা রয়েছে। বর্তমানে ফটোগ্রাফিকে মানুষ ক্যারিয়ার হিসেবে বেছে নিচ্ছে। কারন দিনদিন ফটোগ্রাফির পরিসর বাড়ছে। আজ বিশ্বজয়ী বাংলাদেশের আলোকচিত্রীরা। বিদেশিরা এখন আমাদের আলোকচিত্রীদের কাজের দিকে তাকিয়ে রয়। ঈর্ষণীয় একটি অবস্থানে বাংলাদেশের ফটোগ্রাফি।আধুনিক প্রযুক্তি ও বিজ্ঞানের সমন্বয়ে ফটোগ্রাফারদের জন্য নতুন অনেক সুযোগ তৈরী হচ্ছে। তাই কেউ যদি ফটোগ্রাফিকে ক্যারিয়ার হিসেবে বেছে নেন, তবে তাকে অবশ্যই এ বিষয়ে সর্বোচ্চ জানতে হবে। তাই আমি নতুনদের শেখানোর পাশাপাশি ফটোগ্রাফিতে উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করি।
স্কিল ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী মোহাম্মদ শাহাদাত হোসাইন রিয়াদ বলেন, আমাদের আপাতত লক্ষ্য এ ধরনের প্রয়োজনীয় বিষয়গুলোর ওপর বিভিন্ন কর্মশালার আয়োজন করে মানুষকে বেসিক ধারণা দেওয়া। আগামীতে আমরা গ্রাফিক্স, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, ডিজিটাল মার্কেটিং, ইংলিশ স্কিল, সিভি রাইটিংসহ গুরুত্বপূর্ণ কর্মশালাগুলো হাতে নেবো। বর্তমানে একজন মানুষকে বিভিন্ন বিষয়ে দক্ষ হতে হয়। যেহেতু আমরা দক্ষতা উন্নয়নে কাজ করি, তাই আমরা ভবিষ্যতেও এ ধরনের আয়োজনের চেষ্টা করবো।
কর্মশালা শেষে অংশগ্রহণকারীদের দেওয়া হয় শোয়েব ফারুকী সাক্ষরিত সার্টিফিকেট।